বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ বিজয় ও বঙ্গবন্ধুর জীবন উৎসর্গ
শামসুল আলম সাঈদ
আহমদ পাবলিশিং হাউস
[ বইটি অনলাইনে আমরা সর্বপ্রথম আপলোড করি ]

বাঙালির সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সর্বকালের বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, বিজয় ও স্বাধীনতা অর্জন। যতদিন বাঙালি থাকবে, বাঙালি চেতনা থাকবে এ স্বাধীনতা ও গৌরব হারিয়ে যাবে না। এ গৌরব গাঁথার বর্ণনা চিরদিন চলবে, বাঙালির প্রতিক্ষণের বাংলার প্রতি ধূলি কণার সাথে মিশে আছ তা। আরও উজ্জ্বল্য এবং আরও সমৃদ্ধি পেয়ে বিশ্বসভায় বিশ্বমানসে স্থান করে নেবে এবং যুগে যুগে বাঙালির চিত্তে সঞ্জীবন সুস্থ আস্বাদন পেয়ে এ বীরত্ব-দর্পণকে মহিমাময় করে তুলবে।
তবে মাত্র নয় মাসের সফল নয় এ মুক্তিযুদ্ধ। যদিও এ সময়ে ত্রিশ লক্ষ বাঙালির প্রাণ উৎসর্গ, তিন লক্ষ মা-বোনের ইজ্জত, মুক্তিযোদ্ধাদের সবিক্রম যুদ্ধাগ্রহ এবং দেশের মানুষের অবিরাম মুক্তি আকাঙ্ক্ষা ছিল এর জন্য দায়ী। কিন্তু হাজার বছর ধরে বাঙালি পরাধীনতার গ্লানি পেয়েছে, বিদেশি শাসন পীড়ন অত্যাচার সয়েছে এবং সর্বশেষ পাকিস্তানি আধিপত্য ও শোষণ অত্যাচারের দরুন অনিবার্য এর সূত্রপাত ও লক্ষ্য অর্জনে এ পরিণাম।
দুঃখের বিষয় যে ক্রুর পাকিস্তানিদের পরাজিত করে এ বিরাট অর্জন, অথচ সেই পাকিস্তানিরা ও পাকিস্তানি-মনারা অগোচরে স্বাধীনতার পরেও বাঙালির ভেতর বিরাজ করছিল, তারা পরাজয় সহ্য করতে পারেনি। গোপনে ষড়যন্ত্র করে স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় স্বাধীনতার নায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিলুপ্ত করে এবং পাকিস্তানি কায়দায় বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থা সৃষ্টি করে ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসিত করে, তাদের ক্ষমতা দিয়ে বাংলাদেশের পতাকাকে অবমাননা করে। পক্ষান্তরে তারা স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে থাকে। সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, স্বৈরতন্ত্র, সাম্প্রদায়িকতা, সকল রকম হত্যাকাণ্ডকে ইনডেমনিটি বিল দিয়ে জায়েজ করে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করে। মুক্তিযুদ্ধকে বিকৃত করে জাতির জনকের নাম এদেশ থেকে মুছে দেওয়ার চেষ্টা করে। দীর্ঘ চৌত্রিশ বছর ধরে চলা এ বিভীষিকার অবসান ঘটে আরেক ডিসেম্বর ২০০৮ এসে জাতীয় মূল্যবোধকে পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি রাখে।
মুক্তিযুদ্ধের এ গাঁথার ভেতর দৃষ্টিভ্রম এ চিন্তা থেকে প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করার এ প্রয়াস সঠিক তথ্য ও সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য একজন মুক্তিযোদ্ধার এ সংগ্রাম।