বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্মৃতিকথা
সিরাজুল হোসেন খান
২০০৮
সম্প্রতি ঢাকার কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে বাংলাদেশের বিজয় দিবস (১৬ ডিসেম্বর) এবং স্বাধীনতা দিবস (২৬ মার্চ) সম্পর্কে লিখতে গিয়ে ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের কিছু স্মৃতিচারণ এসে যায় তা পড়ে অনেকে মুক্তিযুদ্ধে আমার স্মৃতিকথা নিয়ে একটি বই লেখার অনুরোধ করেন। তাই, মুক্তিযুদ্ধে প্রায় ৩৫ বছর পর “বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্মৃতিকথা” পুস্তকটি লিখছি। (লেখক)
১৯২৭ সালে হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে সিরাজুল হোসেন খানের জন্ম। ১৯৪৭ সালে ছাত্রসংগঠন মুসলিম ছাত্রলীগের তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। ১৯৪৯ সালে সাব-এডিটর হিসেবে যোগ দেন ইংরেজি দৈনিক অবজারভারে। মাস্টার্স পাস করে সরকারের প্রচার বিভাগে সহকারী পরিচালক নিযুক্ত হন। কয়েক বছর পরে তিনি তা ছেড়ে দিয়ে সাংবাদিকতায় ফিরে আসেন। ১৯৬১ সালে লাহোরের পাকিস্তান টাইমস পত্রিকার ঢাকা ব্যুরো প্রধানের দায়িত্ব নেন। ১৯৬৩ সালে নির্বাচিত হন পূর্ব পাকিস্তান সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক। ১৯৬৪ সালে সব দল-মতের শ্রমিক সংগঠনের সমাহারে গঠিত ফোরামের এবং পরে একই সাথে কয়েক বছর পূর্ব পাকিস্তান শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এই ফেডারেশন ছিল মওলানা ভাসানীর অনুসারী এবং তদানীন্তন বৃহত্তম শ্রমিক সংগঠন। ১৯৬৭ থেকে ১৯৬৯ পর্যন্ত দুই দফায় ১৪ মাস কারাবন্দী ছিলেন। ১৯৬৯ সালে ঢাকাভিত্তিক প্রথম বেসরকারি বার্তা সংস্থা ইস্টার্ন নিউজ এজেন্সি বা এনা’র তিনি প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও অন্যতম উদ্যোক্তা। একই সময়ে ছিলেন ইংরেজি সাপ্তাহিক ঢাকা টাইমস সম্পাদক। ১৯৭০ সালে আরও কয়েকজন বামপন্থী নেতাসহ গোপনে গড়ে তোলেন পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন এবং বাংলাদেশ লিবারেশন লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৭৩ সালে গঠিত জাতীয় গণমুক্তি ইউনিয়নের তিনি প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক। আশির দশকে গণতান্ত্রিক পার্টির নেতা হিসেবে সাতদলীয় জোটে শামিল ছিলেন। তিনি হবিগঞ্জ-২ আসন থেকে ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরশাদ সরকারের সময় তথ্য মন্ত্রী, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী এবং সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালে এরশাদ আওয়ামী লীগকে সমর্থন করলে জাতীয় পার্টি ছেড়ে দেন। কিছু দিন পরই নিজেই যোগ দিলেন বিএনপিতে। সিরাজুল হোসেন খান ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ সালে মারা যান।