বই-দলিলপত্র-প্রবন্ধসকল কনটেন্ট
Trending

মূলধারার রাজনীতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাউন্সিল ১৯৪৯ – ২০১৬ – হারুন অর রশিদ

বই পড়তে 'মুক্তিযুদ্ধ ই-লাইব্রেরি' এ্যাপটি ব্যবহার করুন।

মূলধারার রাজনীতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাউন্সিল ১৯৪৯ – ২০১৬

হারুন অর রশিদ

বাংলা একাডেমি

বইটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন

আরাফাত শাহরিয়ার: বাংলা একাডেমি থেকে বের হয়েছে ‘মূলধারার রাজনীতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাউন্সিল ১৯৪৯-২০১৬’ শীর্ষক একটি গ্রন্থ। গ্রন্থটি লিখেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ। বাংলাদেশের অন্যতম পুরনো, সবচেয়ে বৃহৎ, সেক্যুলার গণতান্ত্রিক ও ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন এই দলের প্রতিষ্ঠা। তখন থেকেই পাকিস্তান রাষ্ট্রে বাঙালিদের ন্যায্য দাবি আদায়ের নিরবচ্ছিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামের পাশাপাশি পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক ধাঁচের রাষ্ট্রযন্ত্র, এর দুঃশাসন, শোষণ ও নিপীড়নের নিগড় থেকে বাঙালি জাতির মুক্তিসংগ্রামে নেতৃত্ব দেয় এই দল। প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে ৬৭ বছর ধরে আওয়ামী লীগের যতগুলো নিয়মিত কাউন্সিল অধিবেশন হয়েছে এবং দুটি বিশেষ কাউন্সিলসহ মোট ২২টি কাউন্সিলের পরিপ্রেক্ষিত, স্থান, সাংগঠনিক রিপোর্ট, নেতাদের নীতিনির্ধারণী ভাষণ, বিতর্ক, দলের গৃহীত নীতি ও কর্মসূচি, গঠনতন্ত্রের পরিবর্তন বা সংশোধন, বিভিন্ন বিষয়ে গৃহীত প্রস্তাব, নেতৃত্ব নির্বাচন, দলে ভাঙনচেষ্টা ইত্যাদি নানা বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে গ্রন্থটিতে।

গ্রন্থটিতে ২৩টি অধ্যায় ও ২০টি পরিশিষ্ট রয়েছে। আওয়ামী লীগের ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্র, নির্বাচনী ইশতেহার, সভাপতির ভাষণ, সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্ট, পত্রপত্রিকা, আর্কাইভস থেকে সংগৃহীত তথ্য, সংশ্লিষ্ট বই, জার্নাল ইত্যাদি সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে লেখা হয়েছে গ্রন্থটি।

আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার পটভূমি, রোজ গার্ডেনের রাজনৈতিক সম্মেলন, আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর সম্পৃক্ততা, প্রতিষ্ঠাকালীন খসড়া ম্যানিফেস্টো ও গঠনতন্ত্র ইত্যাদি বর্ণনা করা হয়েছে প্রথম অধ্যায়ে। দলের পূর্ণাঙ্গ রূপদান, আওয়ামী মুসলিম লীগ নাম থেকে ‘মুসলিম’ শব্দ বাদ দিয়ে একে অসাম্প্রদায়িকীকরণ, দল থেকে ভাসানীর বিদায়, দলের পুনরুজ্জীবন, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৬ দফা ঘোষণা, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের প্রতি আস্থা, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি আইয়ুব সরকারের নতুন ষড়যন্ত্র ইত্যাদি আলোচনা করা হয়েছে পরবর্তী অধ্যায়গুলোতে।

কাউন্সিল অধিবেশন ১৯৭০ সালের জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতির নানা বিষয় উঠে এসেছে নবম অধ্যায়ে। স্বাধীনতা-উত্তর প্রথম কাউন্সিল হয় ১৯৭২ সালে। এই কাউন্সিলে দেশ গড়ার অঙ্গীকার-সংগ্রামের নানা পরিকল্পনার কথা আলোচনা করা হয়েছে অধ্যায় ১০-এ। পরের অধ্যায়গুলোতে ১৯৭৪ কাউন্সিল অধিবেশনের স্বাধীনতাবিরোধীদের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ এবং সোনার বাংলা গড়ার অঙ্গীকার, ১৯৭৭ সালের কাউন্সিলে দল পুনর্গঠনের উদ্যোগ, ১৯৭৮ কাউন্সিলের দলীয় ঐক্য রক্ষার সংকট, ১৯৮১ কাউন্সিলের সর্বসম্মতিক্রমে শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী করা, ১৯৮৭ কাউন্সিলের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম, ১৯৯২ সালে কাউন্সিলের নতুন অর্থনৈতিক নীতিমালা, ১৯৯৭ সালে কাউন্সিল অধিবেশনের ক্ষুধা, দারিদ্র্য, নিরক্ষরতামুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়, ২০০২ সালের কাউন্সিলে বিএনপি-জামায়াত চক্রের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী দলের ঐক্যের আহ্বান, ২০০৯ সালে কাউন্সিলের দিনবদলের সনদ ‘ভিশন ২০২১’ ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার এবং ২০১২ সালে কাউন্সিল অধিবেশনের সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ দমন ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের অঙ্গীকারসহ বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

সবশেষ ২০১৬ সালের কাউন্সিল অধিবেশন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে অধ্যায় বাইশে। কাউন্সিলে গৃহীত প্রস্তাব, গঠনতন্ত্র সংশোধনী, সরকার ও দলের মধ্যকার সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন ভাবনা, দলের কার্যনির্বাহী কমিটিতে নারী ও তরুণ নেতৃত্বের অবস্থান, শক্তহাতে জঙ্গিগোষ্ঠী দমনসহ নানা বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে এতে।

আওয়ামী লীগের ১৯৫৩ ও ১৯৯৫ সালের দুটি বিশেষ কাউন্সিল নিয়েও আছে দুটি অধ্যায়। প্রথমটিতে ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে যুক্তফ্রন্ট গঠনের পটভূমি, যুক্তফ্রন্ট গঠন প্রশ্নে বিতর্ক, বঙ্গবন্ধু ও অন্য শীর্ষ নেতাদের অবস্থান, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার, কাউন্সিল-পরবর্তী ঘটনাবলি বর্ণনা করা হয়েছে। শেখ হাসিনার নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি ও এর যৌক্তিকতা, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা, সর্বোপরি তাঁর উন্নয়ন-ভাবনা এবং পরবর্তী নির্বাচনে দলের সম্ভাব্য কর্মসূচি স্থান পেয়েছে ১৯৯৫ সালের বিশেষ কাউন্সিল অধিবেশনে।

আওয়ামী লীগের কাউন্সিল, এর গুরুত্ব, শুরু থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন কাউন্সিলে গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত, নেতৃত্ব নির্বাচন ও নির্বাচনের ধরন, দলের বৈশিষ্ট্য, কিভাবে আওয়ামী লীগ অন্য দল থেকে স্বতন্ত্র, এর অন্তর্নিহিত শক্তি ও এই শক্তির উৎসসহ দলটির নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে উপসংহারে। বইটি পড়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও উন্নয়নে আওয়ামী লীগের অবদানের কথা জানা যাবে।

মন্তব্যসমূহ
বই পড়তে 'মুক্তিযুদ্ধ ই-লাইব্রেরি' এ্যাপটি ব্যবহার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button