৭১’এর জেনোসাইড ও নির্যাতন আর্কাইভ
Trending

একাত্তরের বাঙালি জেনোসাইডকে স্বীকৃতি জানিয়েছে লেমকিন ইন্সটিটিউট

বই পড়তে 'মুক্তিযুদ্ধ ই-লাইব্রেরি' এ্যাপটি ব্যবহার করুন।

‘লেমকিন ইন্সটিটিউট’ ডিসেম্বর ৩১, ২০২১ তারিখে তাদের ওয়েবসাইট ও সোশ্যাল মিডিয়ায় একাত্তরের বাঙালি জেনোসাইড’ নিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে।

বিবৃতিতে সংগঠনটি “১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সামরিক বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দালালদের দ্বারা সংঘটিত বাঙালি জাতির বিরুদ্ধে সংঘটিত জেনোসাইডকে” স্বীকৃতি দেয় এবং আহবান জানায় আন্তজার্তিক সংগঠনগুলো যেন বাঙালি জেনোসাইডকে স্বীকৃতি প্রদান করে।

লেমকিন ইন্সটিটিউটের এই উদ্যোগকে ‘মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ’ স্বাগত জানায়।

জেনোসাইড প্রতিরোধের আন্দোলন ও কার্যক্রমে এই স্বীকৃতির গুরুত্ব অপরিসীম।

একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানিদের দ্বারা সংঘটিত বাঙালি জেনোসাইডের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে লেমকিন ইন্সটিটিউটের এই স্বীকৃতি গুরুত্বপূর্ণ।

লেমকিন ইন্সটিটিউট বিবৃতির সারকথাঃ

বিবৃতিতে ১৯৪৭-এ ধর্মের ভিত্তিতে ভারত উপমহাদেশ ভাগ হয়ে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

বিবৃতির মূলভাবে বলা হয়েছে – পাকিস্তানিদের দৃষ্টিতে বাঙালি মুসলমানরা ছিল হিন্দু-ঘেঁষা, ‘প্রকৃত মুসলমান’ নয়। সামগ্রিক বাঙালি জাতির বিরুদ্ধে পাকিস্তানের দৃষ্টি ছিল – অনাস্থা, ঘৃণা এবং আক্রোশের। তাই, পাকিস্তান সরকার সর্বস্তরে বাঙালি জাতিকে অবদমিত রাখার নীতি গ্রহণ করেছিল।

একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ও রাজাকার-আল বদর-আল শামস সহ তাদের দেশীয় দালালরা বাঙালি জেনোসাইড সংঘটনের মধ্য দিয়ে তাদের চুড়ান্ত ঘৃণা ও আক্রোশের বহিঃপ্রকাশ ঘটে ছিল।

বর্তমানে একাত্তরে বাঙালি জেনোসাইড সংঘটনকারী দেশীয় দালালদের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার কার্য চলছে বাংলাদেশে। লেমকিন ইন্সটিটিউট আন্তজার্তিক সংগঠনগুলোকে এই বিচারকার্য সমর্থন ও সহযোগিতার আহবান জানিয়েছে।

লেমকিন ইন্সটিটিউট বিবৃতিতে একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সামরিক বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দালালদের দ্বারা সংঘটিত বাঙালি জেনোসাইডকে স্বীকৃতি দেয় এবং আহবান জানায় যেন, আন্তজার্তিক সংগঠনগুলো যেন বাঙালি জেনোসাইডকে স্বীকৃতি প্রদান করে।

যেভাবে এলো স্বীকৃতিঃ

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহিদ সাংবাদিক সিরাজউদ্দিন হোসেনের পুত্র তৌহীদ রেজা নূর ‘একাত্তরে সংঘটিত বাঙালি জেনোসাইডের’ স্বীকৃতির বিষয়ে নভেম্বর ১৫, ২০২১ এ যোগাযোগ করেছিলেন লেমকিন ইন্সটিটিউটে।

এর প্রেক্ষিতে, ডিসেম্বর ৩১, ২০২১ তারিখে লেমকিন ইন্সটিটিউট ‘একাত্তরে সংঘটিত বাঙালি জেনোসাইড’ বিষয়ে স্বীকৃতি সংক্রান্ত বিবৃতি প্রকাশ করে।

লেমকিন ইন্সটিটিউটঃ

লেমকিন ইন্সটিউটের পুরো নাম The Lemkin Institute for Genocide Prevention (LIPG)।

আন্তর্জাতিক এই সংগঠনটি ২০১৭ সাল থেকে জেনোসাইড প্রতিরোধে জনসচেতনতা নিয়ে কাজ করছে।

ইরাকে ইসলামিস্ট সন্ত্রাসী ‘আইসিসের’ হাতে সংঘটিত জেনোসাইড প্রতিরোধে কাজ করা Iraq Project for Genocide Prevention থেকে লেমকিন ইন্সটিউটের সূচনা হয়।

সংগঠনটির উদ্যোক্তা Elisa von Joeden-Forgey এবং Irene Victoria Massimino।

Elisa von Joeden-Forgey বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ হ্যাম্পশায়ার স্টেটের ইউনিভার্সিটি সিস্টেম অব নিউ হ্যাম্পশায়ারের কি’ন (Keene) স্টেট কলেজে ইতিহাস বিষয়ের এসোসিয়েট প্রফেসর হিসেবে কর্মরত।

এবং Irene Victoria Massimino বর্তমানে আর্জেন্টিনার The National University of Tres de Febrero-এর আইন বিষয়ে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন।

রাফায়েল লেমকিনঃ

লেমকিন ইন্সটিটিউট সংগঠনটি তাদের নাম গ্রহণ করে রাফায়েল লেমকিনের নাম হতে।

রাফায়েল লেমকিন ছিলেন পোলিশ বংশোদ্ভূত একজন আইনজীবী।

জেনোসাইড সংজ্ঞায়িত করা, জেনোসাইড প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক কনভেনশানের উদ্যোগ নেয়ার নেপথ্যে ছিলেন রাফায়েল লেমকিন।

বিবৃতির লিংকঃ

https://www.lemkininstitute.com/statement-bangladesh-genocide

ব্যাকাপ লিংকঃ

https://archive.is/GVedx

মন্তব্যসমূহ
বই পড়তে 'মুক্তিযুদ্ধ ই-লাইব্রেরি' এ্যাপটি ব্যবহার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button