জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ড
জহুরুল আলম সিদ্দিকী
১৯১৯ সালের এপ্রিল মাসে অমৃতসরের জালিয়ানওয়ালাবাগে ইংরেজ সেনাপতি জেনারেল ডায়ারের নির্দেশে ঘটেছিল এক পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড। বাগে বৈশাখী মেলায় উপস্থিত পঁচিশ হাজার নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের উপর নির্বিচারে গুলী চালিয়ে হত্যা করা হয়েছিল দু’হাজারের মতো শান্তিপ্রিয় মানুষকে। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ড ইংরেজ শাসনের দুরাপনেয় কলঙ্ক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। শাসকদের এই নির্মমতায় আহত হয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ব্রিটিশ সরকারের দেয়া ‘নাইট’ উপাধি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেন। ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল কুখ্যাত ‘রাওলাট আইন’ নিয়ে। ভারতবর্ষে ইংরেজ শাসনকে পাকাপোক্ত করার জন্য ব্রিটিশ আইনজীবী স্যার সিডনী রাওলাটকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিকে দায়িত দেয়া হয় ভারতে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য যুবকরা যে মরণপণ যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে কীভাবে তা দমন করা যায় তার সুপারিশ প্রণয়ন করা । রাওলাট কমিটি সুপারিশ করলেন, বিপ্লাবাত্মক অপরাধী বলে সরকার যাকে নির্ণিত করবেন তাকে গ্রেফতার করে গোপন আদালতে বিচার করা হবে। বিচারপতির রায়ের উপর অন্য কোনো আদালতে আপীল করা যাবেনা। রাওলাট কমিটির এই সুপারিশ বড়লাট অনুমোদন করলে ভারতব্যাপী প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। বিভিন্ন সভা-সমাবেশের মাধ্যমে এই আইন প্রত্যাহারের দাবী জানান হয়। জালিয়ানওয়ালাবাগে এই ধরনের প্রতিবাদ-সভা হচ্ছে মনে করে নির্বিচারে গুলীবর্ষণ করা হয় নিরস্ত্র জনতার উপর। ভারতবর্ষের দীর্ঘ স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক সংগ্রামের ইতিহাসকে তুলে ধরার জন্যই আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা গ্রন্থটি প্রণয়নে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন বন্ধুবর বাবলা। ইতিহাস সচেতন পাঠকের কাছে বইটি আদৃত হলে আমার শ্রম সার্থক মনে করব। নতুন আঙ্গিকে বইটির ৩য় সংস্করণ প্রকাশে উদ্যোগ নেয়ায় মুক্তধারার অন্যতম পরিচালক বাবু জহর লাল সাহাকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
– জহুরুল আলম সিদ্দিকী ১-২-২০১১
১৯১৯ সালের এপ্রিল মাসে অমৃতসরের জালিয়ানওয়ালাবাগে ইংরেজ সেনাপতি
জেনারেল ডায়ারের নির্দেশে ঘটেছিল এক পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড।
বাগে বৈশাখী মেলায় উপস্থিত পঁচিশ হাজার নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের উপর নির্বিচারে গুলী চালিয়ে
হত্যা করা হয়েছিল দু’হাজারের মতাে শান্তিপ্রিয় মানুষকে। ভারতের স্বাধীনতা
সংগ্রামের ইতিহাসে জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ড ইংরেজ শাসনের দুরাপনেয়
কলঙ্ক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। শাসকদের এই নির্মমতায় আহত হয়ে কবিগুরু
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ব্রিটিশ সরকারের দেয়া নাইট’ উপাধি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেন।
ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল কুখ্যাত রাওলাট আইন’ নিয়ে। ভারতবর্ষে ইংরেজ
শাসনকে পাকাপােক্ত করার জন্য ব্রিটিশ আইনজীবী স্যার সিডনী রাওলাটকে প্রধান
করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিকে দায়িত্ব দেয়া হয় ভারতে স্বাধীনতা
সংগ্রামের জন্য যুবকরা যে মরণপণ যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে কীভাবে তা দমন করা যায়
তার সুপারিশ প্রণয়ন করা। রাওলাট কমিটি সুপারিশ করলেন, বিপ্লবাত্মক অপরাধী
বলে সরকার যাকে নির্ণিত করবেন তাকে গ্রেফতার করে গােপন আদালতে বিচার
করা হবে। বিচারপতির রায়ের উপর অন্য কোনাে আদালতে আপীল করা যাবেনা।
রাওলাট কমিটির এই সুপারিশ বড়লাট অনুমােদন করলে ভারতব্যাপী প্রতিবাদের ঝড়
ওঠে। বিভিন্ন সভা-সমাবেশের মাধ্যমে এই আইন প্রত্যাহারের দাবী জানান হয়।
জালিয়ানওয়ালাবাগে এই ধরনের প্রতিবাদ-সভা হচ্ছে মনে করে নির্বিচারে গুলীবর্ষণ
করা হয় নিরস্ত্র জনতার উপর।