দাম দিয়ে কিনেছি এই বাংলা
জাফর ইমাম, বীর বিক্রম
২০১৬
গেরিলা ও সম্মুখ যুদ্ধের তীব্রতায় পুরো বাংলাদেশের রণাঙ্গন ছিল উত্তপ্ত। গঙ্গাসাগর সালদানদী, মন্দবাগ, হিলি, কমলপুর, জামালপুর, সাতক্ষীরা কানাইঘাটসহ আরো অনেক রণাঙ্গনের পাশাপাশি বিলোনিয়া রণাঙ্গন অত্যন্ত উত্তপ্ত একটি রণাঙ্গন। একাত্তরের ফেনী-বিলোনিয়া ছিল একটি উত্তপ্ত রণাঙ্গন—যুদ্ধের শুরু থেকে শেষ অবধি। প্রায় ১০০ বর্গমাইলের এই এনক্লেভটির স্ট্রাটেজিক গুরুত্বের কারণে ফেনী-বিলোনিয়া ছিল আমাদের এবং পাকিস্তানিদের জন্য মর্যাদার লড়াই ক্ষেত্র। জুন মাসের প্রথমার্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ জেনারেল আবদুল হামিদ খান এখানে আসেন নিজেই যুদ্ধের দিক নির্দেশনা দিতে। মিত্র বাহিনীর ৪ কো-কমান্ডার লে. জেনারেল সগত সিং এবং তার ২৩ মাউন্টেন ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং মে. জেনারেল আর. ডি. হীরা উদ্বিগ্ন ছিলেন বিলোনিয়ার দখল নিয়ে। আমাদের ছিলেন অপেক্ষাকৃত দুইজন অত্যন্ত জুনিয়ার অফিসার ২নং সেক্টর কমান্ডার মেজর খালেদ মোশাররফ এবং ফেনী-বিলোনিয়া রণক্ষেত্রের টাস্ক ফোর্স কমান্ডার ক্যাপ্টেন জাফর ইমাম আর তার আ-বু সাহসের এক দঙ্গল সহযোদ্ধা। তারাই ক্যাপ্টেন জাফর ইমামের অধিনায়কত্বে অর্থাৎ ১০ম ইস্ট রেজিমেন্টের সৈনিক এবং গণযোদ্ধারা পর্যুদস্ত, পরাভূত এবং পরাজিত করে ফেনী-বিলোনিয়ায় যুদ্ধরত পেশাদার পাকিস্তানি সেনাদের। মিত্র বাহিনীর আর্টিলারি অবশ্য অসামান্য ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফায়ার সাপোর্ট প্রদান করেছিল। যুদ্ধরত ২৪ এফ এফ রেজিমেন্ট-এর সব অফিসার ও সৈনিক যুদ্ধবন্দি হয় ক্যাপ্টেন জাফর ইমামের কাছে, ২৫শে মার্চের অব্যবহিত পূর্বে যে ইউনিটে তিনি চাকরিরত ছিলেন।