বই-দলিলপত্র-প্রবন্ধ
Trending

স্বাধীনতা যুদ্ধের অপর নায়কেরা – নুরুজ্জামান মানিক

বই পড়তে 'মুক্তিযুদ্ধ ই-লাইব্রেরি' এ্যাপটি ব্যবহার করুন।

স্বাধীনতা যুদ্ধের অপর নায়কেরা

নুরুজ্জামান মানিক

২০০৯

ডাউনলোড করতে ক্লিক করুন (লেখকের অনুমতিক্রমে ডাউনলোড লিংক দেয়া হলো)

আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের নই, পরবর্তী প্রজন্মের, তাদের মধ্যে একটা খেদ সবসময় থেকেই যাবে- জাতির সবচেয়ে গৌরবময় মুহূর্তে আমাদের সরাসরি অংশগ্রহণ নেই বলে। এই খেদ কি মেটানো সম্ভব? সম্ভব-অসম্ভব হয়তো অন্য বিতর্ক, তবে মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী প্রজন্ম হিসেবে আমাদের অনেক দায়িত্ব- মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধরে রাখা, বীর মুক্তিসেনাদের যথাযথ সম্মান প্রদান, মুক্তিযুদ্ধের যথাযথ ইতিহাস সংরক্ষণ ইত্যাদি, অনেক কিছু। আমাদের মধ্যে কেউ কেউ হঠাৎ আবেগের বশে এগুলো নিয়ে টুকটাক কাজ করি, কেউ বা সমস্ত সত্ত্বাকেই বিলিয়ে দিই মুক্তিযুদ্ধের পেছনে; বোধহয় সে সময়কার যোদ্ধা না হওয়ার কারণেই এই বিলিয়ে দেওয়ার বোধটা কাজ করে।

ব্লগার নুরুজ্জামান মানিক অনেকদিন ধরেই মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গবেষণা-লেখালেখি করছেন। সামহোয়্যার ইন, সচলায়তন থেকে শুরু করে যেখানেই তিনি লিখেন, মুক্তিযুদ্ধই তাঁর লেখার মূল উপজীব্য। ব্লগের আগে তিনি জাতীয় সংবাদপত্রগুলোতেও লেখালেখি করেছেন, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস যেখানে সম্ভব সেখানে তুলে আনার নিরন্তর প্রয়াস তার মধ্যে দেখা যায়। এরই ধারাবাহিকতায় এবার বইমেলা তাঁর বই স্বাধীনতা সংগ্রামের অপার নায়কেরা’ প্রকাশিত হচ্ছে। প্রকাশক শুদ্ধস্বর। বইটিতে তিনি মূলত বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন, সেগুলোর জবাব বের করতে চেয়েছেন নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৩৮ বছর পর আজও স্বাধীনতা-সম্পর্কিত বিবিধ প্রশ্নের নিষ্পত্তি হয় নি। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরে পুর্ব পাকিস্তান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার পর দেশের স্বাধীনতার জন্য প্রথমে কে বা কারা সংগ্রাম করেছিলো বা স্বাধীনতার কথা বলেছিলো বা স্বাধীনতার ঘোষণা কে দিয়েছিলো তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে, যার অদ্যাবধি কোনো সমাধান হয় নি। কারা স্বাধীনতার জন্য প্রথম চিন্তাভাবনা শুরু করেছিলো? দেশের নাম ‘বাংলাদেশ’ কিভাবে এলো-কার চিন্তায়? জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটিকে প্রথম প্রস্তাবনা করেন (বাংলাদেশের ইতিহাসভিত্তিক কোন গ্রন্থ বা আর্কাইভসে এই তথ্য নেই)? একাত্তরে রণাঙ্গনে মুক্তিযোদ্ধারা সদ্য মুক্তাঞ্চলগুলোতে মানচিত্রখচিত যে লালসবুজ পতাকা টাঙিয়ে দিতেন, সেই পতাকার মুল পরিকল্পনাকারী কারা? কে মুল নকশাবিদ? মুক্তিযুদ্ধের শ্লোগান ‘জয় বাংলা’র সুত্রপাত কিভাবে হলো- কারা করলো ? সশস্ত্র উপায়ে দেশকে স্বাধীন করার উদ্যোগ প্রথম কারা নিয়েছিলো? আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় কি ছিলো? একাত্তরের উত্তাল মার্চে কি সত্যি কোন প্রস্তুতি ছিল না? যদি নাই থাকে তবে অপারেশন সার্চ লাইটেই কেন টার্গেট ছিলেন খসরু? কেন লে. ক. মোয়াজ্জেমকে তাঁর পরিবারের সামনে গুলি করে লাশ টেনে নিয়ে যায় ঘাতক পাকবাহিনী? ২৬ মার্চে স্বাধীনতা ঘোষণার আগে থেকেই বিভিন্ন সেনানিবাসে বাঙ্গালি অফিসারদের বিদ্রোহের হেতু কী? তারা কি বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলো? যদি তাই হয় তবে, বাঙ্গালি সেনা কর্মকর্তা-সিপাহীদের মুক্তিযুদ্ধের জন্য উদ্দীপিত করায় নিয়োজিত ছিল যেসব সেনা কর্মকর্তা-তারা কারা? এসব প্রশ্নের জবাব এবং যথার্থ ইতিহাসের স্বর্ণতোরন উন্মোচনের লক্ষ্যে একটি বিনীত প্রয়াস হিসেবেই “স্বাধীনতা যুদ্ধের অপর নায়কেরা” রচনার অবতারনা। ১৭৫৭ থেকে ১৯৭১ সালের ইতিহাস নিয়ে রচিত হয়েছে “মুক্তিযুদ্ধের পটভুমি”। ‘মুক্তিযুদ্ধের কথ্য ইতিহাস’ রচনায় এসেছে ১১ নং সেক্টরের তথা উত্তর রণাঙ্গনের অনেক অজানা তথ্য। গ্রন্থে কর্নেল তাহের বী.উ. ও কর্নেল হায়দার বী.উ.-এর ওপর ব্যতিক্রমী দুটি রচনা। এছাড়া বঙ্গবন্ধু হত্যা নিয়ে একটি মর্মস্পর্শী লেখা রয়েছে। বাকি সব লেখাই মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত।

নুরুজ্জামান মানিকের বইটি মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে আগ্রহী পাঠকের মনের খোরাক মেটাবে। বইটি পাওয়া যাবে শুদ্ধস্বরের স্টলে। পাঠকদের অনুরোধ রইলো বইটি পড়ার। (লিখেছেন – সামুর ব্লগার অনিশ্চিত)

মন্তব্যসমূহ
বই পড়তে 'মুক্তিযুদ্ধ ই-লাইব্রেরি' এ্যাপটি ব্যবহার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button